নিজস্ব প্রতিবেদক :-
বিশ্বময় মহামারি করোনার মধ্যেই বিধ্বংসী রূপ নিয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এটি আরো শক্তি সঞ্চয় করে সুপার সাইক্লোনে রূপ নেয়া ঝড়টি উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বেড়েছে তাপপ্রবাহ,
জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর হতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার
সমুদ্রবন্দরের জন্য রয়েছে ৬ নম্বর সর্তক সংকেত। পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে সুপার ঘূর্ণিঝড় আকারে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে,কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে চট্টগ্রাম ও বরিশালে মাঝামাঝি উপকূলে।
সোমবার থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ ম নাছির উদ্দীন এর নির্দেশে চসিক এর পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচিী গ্রহণ করা হয়েছে। দামপাড়াস্থ কন্ট্রোলরুম হতে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
রক্ষা করা হচ্ছে নগরীর ঝূকিপূর্ণ ওয়ার্ড ৫, ৭, ৯, ১০, ১১, ২৬, ৩৪, ৩৫, ৩৭, ৩৮,৩৯, ৪০ ও ৪১
এর স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলদের সাথে। এই সমস্ত এলাকার বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগিদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তর করা হচ্ছে। ঝুুঁকি এড়াতে চসিকের পক্ষ থেকে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানরত ও উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে করা হচ্ছে মাইকিং।
এছাড়া দূর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালিন ও দূর্যোগ পরবর্তী সময়ে অবস্থানের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে তৎসংশ্লিষ্ট সাইক্লোন সেন্টার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এইসব আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জীবনুনাশক স্প্রে করে জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশিক্ষিত ভোলান্টিয়ার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জরুরী চিকিৎসাসেবায় চসিকের মেডিকেল টীম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আজ সকালে দামপাড়স্থ চসিক কন্ট্রোলরুমে
ঘূর্ণিঝড় আস্ফান বিষয়ে প্রস্তুতি বৈঠকে চসিকের পক্ষ থেকে এইসব তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ.কে.এম রেজাউল করিম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌলশী সুদীপ বসাক প্রমুখ
উপস্থিত ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের আম্ফান-এ ভীত না হয়ে মনোবল নিয়ে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলার আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগ নতুন নয়। এর পূর্বেও আমরা বহু প্রাকৃতিক দূর্যোগের মোকাবেলা করেছি। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। তাই আমাদের প্রস্তুতির আয়োজনও ভিন্ন। নগরবসীর জান-মাল সুরক্ষায় আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছি।
আমাদের নির্দেশনা মেনে সমন্বিতভাবে ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলা করলে আমরা এর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো। তবে যেহেতু এখন করোনার প্রাদুর্ভাব রয়েছে তাই অবশ্যই তাড়াহুড়ো না করে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে ও সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মেনে কার্য সম্পাদন করতে হবে।
ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কীত যে কোন প্রয়োজনে আমাদের কন্ট্রোল রুম ০৩১-৬৩০৭৩৯, ০৩১-৬৩৩৬৪৯- তে যোগাযোগ করলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।