নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-
সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করার হীন মানসিকতায় সরকারি ও বিরোধপূর্ণ জায়গায় মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে
স্থাপনা গড়ে তোলা সরকারিভাবে আইনত অপরাধ। এধরণের অবধৈ স্থাপনা অপসারণে উদ্যোগ নেয়া হলে, ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসে কিছু কুচক্রি মহল। তাই দেশের আলেম- ওলামাদের খেয়াল রাখতে হবে, যাতে কোন মহল যাতে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে দেশে ফ্যাসাদ ও অস্থীতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে। মসজিদের জায়গা ওয়াক্ফ এস্টেটের অধীনে থাকা সরকারি নিয়ম।
বুধবার সকালে কর্পোরেশনের টাইগারপাসস্থ বাটালী হীলের অস্থায়ী অফিসে চট্টগ্রাম নগরীর আলেম-ওলেমাদের সাথে মতবিনিময়কালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন এসব কথা বলেন।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম ও স্বাক্ষাতপ্রার্থী আলেম-
ওলামাদের মধ্যে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ অছিয়র রহমান, বায়তুশ শরফ কামিল মাদ্রাসার আল্লামা মোহাম্মদ সৈয়দ আবু নোমান ,জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার কাজী মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ,আল আমিন বারীয়া মাদ্রাসার আল্লামা আবদুল আজিজ আনোয়ারী,মাদ্রাসা-ই-ইসলাময়িা তৈয়বিয়া সুন্নিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আল্লামা মোহাম্মদ বদিউল আলম রেজভী, ফতেপুর মনজুরুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসার আল্লামা জামাল উদ্দীন, দারুল মারিফ মাদ্রাসার
আল্লামা মোহাম্মদ ফোরকানুল্লা খলিল, দারুল মারিফের আমিনুল ইসলাম, চসিকের মাদ্রাসার পরিদর্শক হারুনুর রশিদ প্রমুখ ।
এ সময় প্রশাসক নগরীর শেরশাহ এলাকায় কর্পোরেশনের নালা দখল করে একটি মহল মসজিদ নির্মাণ করায় জনস্বার্থে তা নিয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সে ব্যাপারে আলেমদের পরামর্শ চাইলে তারা জায়গাটি ওয়াক্ফ কিনা ও ৫০ বছরের পুরনো কিনা তা যাচাই করে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেন। আলেমগণ বলেন, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি দুরভিসন্ধিমূলক হয়ে দখলের মানষিকতা নিয়ে সরকারি জায়গা জমিতে কোন মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করে তা গুনাহ্ ও অপরাধ। ইসলাম এ ধরনের অপরাধকে কখনো অনুমোদন
করেনা। মসজিদ মাদ্রাসার স্থান অবশ্যই ওয়াক্ফ হওয়া চাই।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জায়গা ও নালা দখল করে পিসি রোডে মাজার ও শেরশাহতে যে মসজিদ
নির্মাণ করা হচ্ছে তা ঠিক নয় বলে ওলেমারা মত দেন। এ ধরণের কর্মকান্ড- ধর্ম রাষ্ট্রবিরোধী। জনস্বার্থে এ ধরনের স্থাপনা অপসারণ করা উচিত বলে আলেম-ওলামাগণ ফতোয়া দেন। তারা এসব কাজে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে অইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন।
খোরশেদ আলম সুজন আরো বলেন, আলেম-ওলামারা হলেন আমাদের মাথার তাজ,সম্মানীয় ব্যক্তি। চট্টগ্রামবাসী ধার্মিক ও উদারনৈতিক মনোভাব নিয়ে চলে। এই নগরে মুসলিম,হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রিস্টানসহ
সকল সম্প্রদায়ের মানুষ পারস্পরিক সৌভাতৃত্ব ও সম্প্রীতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। এই অঞ্চলে ধর্মীয় উগ্রবাদের কোন স্থান নাই। কোন ভুলবুঝাবুঝি হলে তা পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ আছে।
তিনি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী লালদিঘীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এটি ছিল সনাতন সম্প্রদায়ের সম্পত্তি। ব্রিটিশ শাষন পরবর্তী এই সম্পত্তি জমিদার রাজা রায় বাহাদুরের মালিকানায় ছিল। প্রয়াত সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী লালদিঘীকে নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করে কর্পোরেশনের মালিকানায় নিয়ে এখানে পার্কের পাশে একটি মসজিদও স্থাপন করেছেন। এখনো এই মসজিদ সংরক্ষিত আছে। এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমার নামাজও আদায় হয়। এসময় বার আউলিয়ার পূন্যভূমি চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক সব মাজার
সংরক্ষণ করার জন্য আলেমগণ প্রশাসককে অনুরোধ করেন।
মতবিনিময় শেষে সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর রূহের মাগফেরাত কামনা ও কোভিড-১৯ থেকে দেশবাসীর রক্ষায় বিশেষ মুনাজাত করা হয়।