আবু হেলাল, (শেরপুর প্রতিনিধি) :-
শেরপুরের নকলা উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নে পরকীয়া প্রেমের জের ধরে চাচী ও ভাশুরপোর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার গোয়ালেরকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, গোয়ালেরকান্দা গ্রামের মো. সোবাহান আলীর স্ত্রী ও পুত্র সন্তানের জননী হাসি বেগম (২৬) ও একই গ্রামের ইয়াদ আলীর ছেলে ও ১ পুত্র সন্তানের জনক হেলাল মিয়া (৩২)।
নকলা থানার পুলিশ নিহত চাচী হাসি বেগমের লাশ শুক্রবার রাতে এবং ভাশুরপো হেলালের লাশ শনিবার সকালে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরের দিকে শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। হেলাল মিয়া কর্মজীবনে একজন আনসার সদস্য ছিলেন এবং হাসি বেগম গৃহিনী ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে , পরকীয়া প্রেমের জের ধরে তাঁরা আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে । এদিকে এলাকাবসীদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায় , প্রায় ১০ বছর আগে নকলা উপজেলার রেহাইয়েরচর গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে হাসি বেগমের সাথে গোয়ালেরকান্দা গ্রামের মো. সোবাহানের বিয়ে হয়। হাসির স্বামী সোবাহান গাজীপুরের একটি পোশাক তৈরি কারখানার কর্মী। তাঁদের ৮ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী ভাশুরপো হেলাল মিয়ার সঙ্গে চাচী হাসি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শুক্রবার সন্ধ্যায় হেলাল মিয়া তার চাচী হাসি বেগমের বাড়িতে আসেন এবং কিছুসময় একান্তে অবস্থান করার পর চলে যায়। বিষয়টি হাসি বেগমের ৮ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে ইয়ামিন দেখে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পরেই স্থানীয়রা হাসি বেগমের স্বামী সুবহানের বাড়িসংলগ্ন একটি জিগার গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।
খবর পেয়ে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে হাসির লাশ উদ্ধার করে নকলা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। অন্যদিকে শনিবার সকালে একই বাড়ির পাশে লোকচক্ষুর আড়ালের একটি বেল গাছের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে পেচানো অবস্থায় হেলাল মিয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান এলাকাবাসী। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ শনিবার ১১টার দিকে হেলালের লাশ উদ্ধার করে। পাঠাকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়েজ মিল্লাত, পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নকলা থানার উপপরিদর্শক রাজিব কুমার ভৌমিক লাশ উদ্ধারের বিষয় দুইটি নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাসি ও হেলালের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরিপূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পরকীয়া প্রেমের জের ধরে তাঁরা আত্মহত্যা করেছেন। তবে পুলিশ ঘটনা দুটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখছে বলে উপপরিদর্শক রাজিব কুমার ভৌমিক জানান।