নিজস্ব প্রতিবেদক:
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জনবহুল এলাকায় মারামারির নাটক সাজিয়ে নুর এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা থেকে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় ডাকাত চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেফতার কৃতদের কাছ থেকে ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
সোমবার (১০ জুলাই) নগরের বায়েজিদ বোস্তামী, সদরঘাট ও কর্ণফুলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদেরর এ তথ্য জানিয়েছেন সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান।
পুলিশের দেয়া তথ্যমতে , আটককৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র। তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে এবং তাদের ব্যাংকিং লেনদেনের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে থাকেন। টার্গেটকৃতদের কে কখন কোন ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যায় এবং কখন উত্তোলন করতে যায় এসব বিষয় ডাকাত চক্রের সদস্যরা নজরদারিতে রাখে। সুবিধা বুঝে একদিন টার্গেট করা ব্যক্তি টাকা জমা দেওয়ার আগে বা উত্তোলন করার পর ব্যাংকের আশপাশে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছামাত্রই অভিযুক্তরা মারামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এতে করে দুই পক্ষের মারামারি মনে করে কোনো পথচারী এগিয়ে আসেন না। এ কৌশলে মারামারির একপর্যায়ে অভিযুক্তরা সুযোগ বুঝে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, একই কায়দায় অভিযুক্তরা গত রোববার (৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানার জুবিলী রোডের রয়েল টাওয়ারের সামনে থেকে মোরশেদ আলম ও ত্রিদিব বড়ুয়া নামে দুজনকে মারধর করে নগদ ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী দুজনেই নুর এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক নুর মো. ইয়াছিন কবির বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ প্রথমে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামি সাহেদ হোসেন মনাকে শনাক্ত করেন। এরপর তাকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে একজনকে সদরঘাট থানা এবং বাকি দুজনকে কর্ণফুলী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় আসামিদের কাছ থেকে সর্বশেষ ঘটনায় লুণ্ঠিত ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার জাফর আহমদের ছেলে একরামুল আলম (৩৭), মিরসরাই উপজেলার শাহ আলমের ছেলে সাহেদ হোসেন মনা (২৪), সাতকানিয়া উপজেলার মো. ইউনুছের ছেলে মো. ইয়াছিন ওরফে এরফান ওরফে সাব্বির (২৪) ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন। তাদেরকে আজ (মঙ্গলবার) সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।