নিজস্ব প্রতিবেদক :-
চট্টগ্রাম সিটি কপোর্রেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন বাংলাদেশ সরকার হিজড়া সম্প্রদায়কে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে
হিজড়া সম্প্রদায়ের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। সোমবার সকালে সিটি কপোর্রেশন কনফারেন্স হলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে হিজড়া প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ বিতরণকালে সিটি মেয়র একথা বলেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় হিজড়া দলনেতা জেরিন,পিংকী তাদের সমস্যাদি সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম,সমাজ সেবা অধিদপ্তরের এডি ওয়াহিদুল আলম,সমাজ সেবা কর্মকর্তা আবুল কাশেম,আরমান বাবু,হাফেজ আমান উল্লাহসহ হিজড়া প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সিটি মেয়র আরো বলেন এই সরকারই হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতির উদ্দেশ্য হচ্ছে হিজড়া সম্প্রদায়কে স্বাভাবিক জীবন ধারায় সম্পৃক্তকরণ। দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে গতি আনায়ন। অর্থনীতির এ গতির জন্য সকল জনগোষ্টির সম্পৃক্ততা অপরিহার্য।কোনো সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে কাংখিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। হিজড়া সম্প্রদায়ও মানুষ। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে আনার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। হিজড়া ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতাদিয়ে ভিক্ষাবৃক্তি থেকে সরিয়ে আনা আনা হচ্ছে হিজড়াদের। এমনকি তাদের সন্তানদের জন্য সরকার চালূ করেছে উপবৃত্তি। সরকারের এ উদ্যোগ আগামী দশ বছর চালু থাকলে দেশে কোনো হিজড়া
বেকার কিংবা ভিক্ষাবৃত্তিতে থাকবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন তাদের নিয়ে আমাদের পরিবার, সমাজের নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তার পরিবর্তন ঘটাও জরুরি। প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশের সব মানুষ সমান। ব্যাপক প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে হিজড়াদের সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যে ভুল ধারণা, তা দূর করতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি তাদের নিজেদেরও মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে বলে মেয়র উল্লেখ করেন। সিটি মেয়র বলেন সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।তারপরও সমাজে তাদের অবস্থানের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সমাজে তারা প্রতিনিয়ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হয়। নিজ পরিবারেও তারা অচ্ছুত ও অনাদৃত। বেশির ভাগ হিজড়াই কোনো সম্মানজনক জীবিকায় নেই, ভিক্ষা ও চাঁদাবাজিই তাদের মূল পেশা। এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র হিজড়া সম্প্রদায়ের ৯জনকে চসিকে চাকুরির কথা উল্লেখ করে বলেন হিজড়াদের সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিত। কিছু মানুষ হিজড়াদের সাথে মজা করতে পছন্দ করে, কেউ আবার এড়িয়ে চলে। নারীদের ক্ষেত্রে তারা হিজড়াদের রীতিমত ভয় পায় বিশেষ করে তাদের অশোভন আচরণ এর কারণে। এই ধরণের আচরণ পরিত্যাগ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরাধীন হিজড়া জনগোষ্টির জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি আওতায় ৫০জন হিজড়াকে ৪টি ট্রেডে ৫০দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিজড়ার হাতে ২৫ হাজার টাকার অনুদান ও সনদ তুলে দেন সিটি মেয়র। হিজড়া জনগোষ্ঠিপর দক্ষতা অর্জন ও স্বাবলম্ভী করার জন্য সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের এই উদ্যোগ। ট্রেডগুলো মধ্যে
হস্তশিল্প,বুটিক,সেলাই ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ রয়েছে।