আব্দুল গফুর :-
অতিবাহিত হয়েছে লকডাউনের তৃতীয় দিন। তৃতীয় দিন থেকে নগরীতে গন পরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশের ফলে আজো প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের মতো যানবাহন সংকটে চরম ভোগান্তি পোহাতে দেখাগেছে নগরের দু’টো ইপিজেডের হাজার-হাজার কর্মজীবী মানুষকে। সকালে যাত্রী অনুপাতে গাড়ি সংকটের ফলে পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে পৌছেছে অগনিত মানুষ।
বিকাল সাড়ে চারটা থেকে রাত নয়টা, ছুটির এই সময়ে সিইপিজেড মোড় থেকে বন্দরটিলা পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে লক্ষ্য করা গেছে রাস্থার দু’পাশে গাড়ির অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে আছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ইপিজেডে কর্মরত শতশত মানুষ। কিছুক্ষণ পর পর গাড়ি আসলেও যাত্রীর তুলনায় গাড়ি সংকট হওয়ার কারনে শত-শত যাত্রী গিয়ে হুমরি খেয়ে পরে গাড়ি উপর, কার আগে কে উঠবে এই প্রতিযোগিতায় ভুলে যায় নিজের নিরাপত্তা কথা। বিশেষ করে এই সময় নারী যাত্রীদের লাঞ্ছনার শিকার হতে দেখাগেছে বেশি।
ইপিজেড এলাকার একদিকে রাস্তা জুড়ে সার্বক্ষনিক লরি ট্রলির দখলদারি, চলমান ফ্লাইওভার নির্মানে দুর্ভোগ, অন্যদিকে লকডাউনের কারনে পরিবহনের সল্পতা। সব মিলিয়ে এক বেহাল অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে নগরীর ইপিজেড এলাকায়। যেনো দেখার কেও নেই। এই অবস্থায় ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি দায়ীত্বরত ট্রাফিক-পুলিশদের।
এদিকে ইপিজেড থানার অপর পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ নাসরীন নামের একজন মহিলা এই প্রতিবদককে বলেন, তিনি ইপিজেডের একটি পোষাক কারখানায় কাজ করেন,ঐ কারখানায় শ্রমিকদের জন্য কোন যানবাহনের ব্যবস্থা না থাকায় তাকে এই লকডাউনের মধ্যে গণপরিবহনে করে আসা যাওয়া করতে হয়।
তিনি জানান, সে বহদ্দারহাট যাবে, সন্ধা সাড়ে ছয়টায় অফিস ছুটি হয়েছে, এখন রাত সোয়া আটটা অথচ এখনো গাড়ি পাইনি। অলংকার যাবে এমন আরেকজন কর্মজীবী নাম সুকুমার, এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সে ক্ষোভের সাথে বলে,সরকার শুধু গাড়ির ভেতর করোনা দেখে, অথচ ইপিজেড এলাকায় প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষের ঢল নামে, এগুলো নিয়ন্ত্রণ না করে গাড়ির ভেতর আলাদা সিটে ৬০ শতাংশ ভাড়া চাপিয়ে দিয়ে আমাদের মুলত কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা এখন গাড়িও পাচ্ছিনা।
এদিকে একাধিক গাড়ির ড্রাইভারের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ইপিজেডের কারখানা সমূহের রিজার্ভ যাত্রী টানে এমন যানবাহনগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালনায়, ইপিজেডে রিজার্ভ সার্ভিসের সংখ্যা বেড়ে গেছে। যার দরুন নগরে লোকাল গণপরিবহনে সংকট দেখাদিয়েছে।
তবে অনেকে মনে করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের অবজ্ঞা আর দুর্নীতির কারনেই ইপিজেড এলাকায় এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার চরম মাসুল দিচ্ছে গাড়ি সুবিধাবঞ্চিত কারখানার হাজার-হাজার নিরোপায় কর্মজীবী ও সাধারন নগরবাসী।