জিয়াউর রহমান জিতু,(মীরসরাই) :-
চট্ট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জে এক যুবককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের চায়নার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মীর হোসেন (২৮) দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের মো. ফজলুল হকের ছেলে।
নিহতের পিতা ফজলুল হক বলেন, গত ১ জুলাই অলিনগর এলাকার জনৈক রবিউল হোসেন ভুট্টুর সাথে ইয়াবা সেবন নিয়ে তার ছেলে মীর হোসেনের কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। এ ঘটনায় ভুট্টু আহত হয়। পরদিন ভুট্টুর লোকজন মীর হোসেনের বাবা ফজলুল হককে তুলে নিয়ে মারধর করে।
এদিকে এরআগে মারামারির ঘটনায় ভট্টু বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের আলোকে গত শুক্রবার থানায় একটি সালিশি বৈঠক হয়। এসময় ফজলুল হককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকাও তিনি পরিশোধ করেন। এর পরদিন শনিবার ভুট্টু মীর হোসেনকে মুঠোফোনে বলেন, ঝামেলা শেষ হয়ে গেছে তুই অমুখ (অজ্ঞাত) স্থানে আয়। রোববার সকালে মীর হোসেন সেখানে গেলে ভুট্টু ও তার লোকজন মীর হোসেনকে তুলে নিয়ে অলিনগর এলাকায় জনৈক চায়নার বাড়ির সামনে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি ও রড় দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে সে রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে মীর হোসেনের বাবা স্থানীয় জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে মীর হোসেনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকাল ৫টার দিকে মীর হোসেন মারা যান।
সন্ধ্যায় থানা কার্যালয়ে নিহতের মা তাহেরের নেছা তখনো জানে না ছেলে মারা গেছেন। তিনি এই প্রতিবেদককে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে তাওয়েল কারখানায় কাজ করে। গত সপ্তাহে ছেলে বাড়িতে এসেছে। ছেলের সংসারে ৮ বছরের একটি মেয়ে ও ৬ বছরের একটি ছেলে আছে। এসময় তিনি তার ছেলের উপর এই বর্বর নির্যাতনের বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মোজাম্মেল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আমরা আহত মীর হোসেনকে উদ্ধার করে হাসাপাতলে নিয়ে যাই। চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেয়ার পথে বিকেলে সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সাথে জড়িত কি না তা যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। নিহতের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ওসি।