নিজস্ব প্রতিবেদক: পরকিয়ার প্রেমের বলি হয়ে সাত মাসের অন্তসত্বায় গর্ভের সন্তান হত্যার দায়ে স্ত্রী তাসলিমা আক্তার আখি ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সন্তানের বাবা নওমুসলিম নাছির উদ্দীন।
জুলাইয়ের ৫ তারিখ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম মেহেনাজ রহমান এর আদালতে নওমুসলিম নাসির উদ্দিন বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
নাসিরের করা মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ১। তসলিমা আকতার আখিঁ (২২), পিতা- মোহাম্মদ শাহজাহান, ২। মোঃ শাহজাহান (৬৫), পিতাঃ- মৃত এজার মিয়া, ৩। আয়শা বেগম (৫৫), স্বামী- মোঃ শাহজাহান ৪। দেলোয়ার (৪২), পিতা- মৃত মোহাম্মদ আবুল কাশেম সাং- হোসেন চৌধুরী বাড়ী, ফইল্যাতলী বাজার, দক্ষিণ কাট্টলী, থানা- পাহাড়তলী, জেলা- চট্টগ্রাম, ৫। নিতাই নাথ (৫২), পিতা- মৃত দিনবন্ধু নাথ, সাং- নাগ পাড়া, বড় বাড়ী, থানা- হালিশহর,জেলাঃ চট্টগ্রাম, ৬। আরাফাত মজুদার (৩২), পিতা- বেলাল হোসেন,সাং- বড়পুল, সুমাইয়া টাওয়ার, চ্যানেল কর্ণফুলী,
থানা- হালিশহর, জেলা- চট্টগ্রাম।
বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নগর গোয়েন্দা শাখাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আলমগীর ফারুখ।
মামলার সূত্রে জানা যায় , ২০১৯ সালে নাসিরের রংনাম্বারে পরিচয় হয় তাসলিমা আক্তার আখির সাথে। এরপর পরিচয় থেকে ভালোবাসায় পরিণত হলে তাসলিমা আক্তার আখির কথা মতে নাসির বিগত ৩১-০১-২০২০ ইং তারিখে তার নিজ ধর্ম হিন্দু ত্যাগ করে স্থানীয় মৌলভীর কাছে গিয়ে কালেমা পাঠের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং একই দিনে দেনমোহর ধার্য্যক্রমে আকদ পাঠের মাধ্যমে নওমুসলিম নাসির ও তাসলিমা আক্তার আখি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
পরবর্তীতে তাসলিমা আক্তার আখি তার স্বামী নাসিরের সাথে শারীরিক মেলামেশা করে আসছিলো এবং নাসির তার স্ত্রী আখিকে ভরন-পোষন, দৈনিক খরচ, চিকিৎসা খরচসহ কাপড় চোপড় ও নিত্য প্রয়োজনীয় সকল খরচাদি বহন করে আসছিলো।
এরপর ২০২১ সালে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নাসির তার স্ত্রী আখির অন্তঃস্বত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আখিকে বিগত ১৭/০৮/২০২১, ১৫/০৯/২০২১, ১৯/১০/২০২১, ১২/১২/২০২১ ইং সহ বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও হালিশহর বড়পুল হাইটেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি ক্লিনিকে ডাঃ জোবাইদা আকতার চৌধুরীর মাধ্যমে নিয়মিত চেকআপ ও চিকিৎসা করাতেন।
পরবর্তীতে তাসলিমা আক্তার তার স্বামী নাসিরকে তাদের অনাগত সন্তানের বৈধ ও দালিলিক পরিচয় নিশ্চিত করতে ২৮/১১/২০২১ইং তারিখে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চট্টগ্রাম এ ইসলাম গ্রহণের হলফনামা সম্পাদন করেন এবং ২৯/১১/২০২১ ইংরেজী তারিখে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়, চট্টগ্রামে হলফনামা সম্পাদন পূর্বক মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার দ্বারা নিকাহনামা রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করেন।
পরবর্তীতে তাসলিমা আক্তার আখি গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি তার পরিবার জানতে পারলে প্রথমে মেনে নিলেও পরবর্তীতে আখির পরিবার তা বিরোধিতা করে নাসিরকে তালাক প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে আঁখি তার স্বামী নওমুসলিম নাসির কে তালাক দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আখির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন বক্তব্য দিবেননা বলে কল কেটে দেয়।
কিন্তু এর আগে বেশকয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যমে দেয়া এক বক্তব্যে আঁখির বক্তব্য ছিলো সন্তান হত্যাতো দুরের কথা, সে কখনোই গর্ভবতীই ছিলেননা।
এবার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। আখি গর্ভবতী থাকা অবস্থায় একাধিকবার হালিশহর বড়পোল মোড়ে হাইটেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গাইনি চিকিৎসক ডাঃ জোবাইদার কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে যেতেন, যার একাধিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করি আমরা৷ তবে গাইনি চিকিৎসক জোবাইদার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও আখির পরকিয়া প্রেমিক আর পরিবার সহ মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তদের প্ররোচনায় ২০২১ সালের ডিসেম্বর এর ৪ তারিখে নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পাঠানটুলিস্থ মিডপয়েন্ট হসপিটাল এন্ড মেটারনিটি সেন্টার লিঃ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আঁখি সাত মাসের অন্তসত্বা অবস্থায় তার গর্ভের সন্তান নস্ট করে ফেলে। যা প্রমাণ মিলে ঐ হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা একটি বৈধ ডকুমেন্ট আর হাসপাতালের ম্যানেজার সজীবের স্বীকারোক্তিতে যার একটি ভিডিও রেকর্ড রয়েছে।
তবে এমন ন্যাক্কারজনক কাজের সহযোগী ডাঃ তাসলিমা এই হাসপাতালের স্থায়ী ডাক্তার না হওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে খোজ নিয়ে ডাক্তার তাসলিমার বাসায় গেলে সেখানেও তিনি দেখা করেননি।
আঁখির ছিলো একাধিক ছেলের সাথে পরকিয়া প্রেম, যার কারনে গর্ভের সন্তান নস্ট করতে আঁখিরও ছিলো তীব্র ইচ্ছা। পরকিয়া প্রেমের বেশ কিছু তথ্য আমাদের হাতে আসে,তার মধ্যে মামলায় ৬ নাম্বার আসামি আরাফাতে ভিডিও স্বীকারোক্তি আমাদের হাতে আসে। ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়, আখির সাথে দীর্ঘদিন তার সম্পর্ক, এছাড়াও আঁখির সাথে অনেকের সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানায় সে। পরে মুঠোফোনে আখির আরেক বন্ধুর সাথে কথা হলে আঁখির সাথে তার সম্পর্কের কথা জানায় সে এবং আঁখির গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টিও সে জানতো বলে জানায়।
এদিকে মামলায় অভিযুক্ত আঁখির ভগ্নিপতি দেলোয়ারের সাথে কথা বলতে ফইল্লাতলী বাজার এলাকায় মন্ত্রী বাড়ি সংলগ্ন তার বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী গেইট আটকে সাংবাদিকদের ঢুকতে বাধা দেয় এবং কোন কথা বলতেই রাজি হননি।
বিষয়টি খবর পেয়ে মামলায় প্রধান আসামি তাসলিমা আক্তার আখি মুঠোফোনে কল করে সাংবাদিকদের শাসিয়ে নিউজ না করতে হুশিয়ারি দেন।
এর আগে বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নিয়ে মিমাংসার প্রস্তাব দেয় আঁখি ও তার পরিবার, তবে প্রস্তাব দিলেও পরবর্তীতে তারা পুনরায় পল্টি নেয়। যার প্রমাণ রাকিব নামের একজন সংবাদকর্মী।
স্ত্রীর প্রতারণার আর পরকিয়ার জেরে সবকিছু হারিয়ে আজ নিঃস্ব প্রায় নওমুসলিম নাসির। ন্যায় বিচারের আশায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে অভিযোগ করেছেন তিনি।