শুভ সকাল ডেস্কঃ-
মুভমেন্ট ডিজ-অর্ডারের ওপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে দিনব্যাপি এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের মেয়র আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
পারকিনসন্স রোগের চিকিৎসার নতুন দিক উদ্বোধন উপলক্ষে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন খ্যাতিমান নিউরো সার্জন টিপু জাহেদ আজিজ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির ও মুভমেন্ট ডিজ-অর্ডার সোসাইটি অব বাংলাদেশের এর যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাক্তার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি প্রফেসর ডা. মুজিবুল হক খান, মুভমেন্ট ডিজ- অর্ডার সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর মেম্বার সেক্রেটারী ডা.আহসান হাবিব সেলিম, চমেক শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি ডা. মোহাম্মদ মনোয়ার উল হক, ডা.হাসানুজ্জামান, প্রফেসর ডা.নোমান খালেদ চৌধুরী, প্রফেসর ডা.হাসান জাহিদুর রহমান, প্রফেসর ডা. এ কে এম আনোয়ার উল্লাহ, প্রফেসর ডা. আনিসুল হক, রবিউল করিম, ডা. জাহিদ রাইহান,প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ডা. প্রণয় কুমার দত্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র বলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানে সমস্যা বলতে কিছু নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানে উদ্ভাবনী ও সৃষ্ঠিশীল গবেষণায় সকল সমস্যা সমাধান রয়েছে। সিটি মেয়র এ প্রজম্মের চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন আমরা চাই সকলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে গবেষণা কাজে মনযোগী হউক। এর মধ্যে থেকে কেউ না কেউ দেশ কিংবা বিশ্ব বরণ্যে চিকিৎসক হিসেবে নিজদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। এ প্রসংগে সিটি মেয়র খ্যাতিমান নিউরো সার্জন টিপু আজিজ এর কথা উল্লেখ করে বলেন ১৩ বছর বয়সে তিনি আমেরিকা যান ,সেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর পড়ালেখা করে ইংল্যান্ডে গমন করেন এবং নিজকে গবেষণা কাজে নিয়োজিত রাখেন। তাঁর এ সাধনায় তিনি আজ বিশ্ববরন্যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষক। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সারা বিশ্বে যে ক’জন চিকিৎসক ডিবিএস (ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন) নিয়ে গবেষণায় কাজ করছেন তিনি তাদের মধ্যে একজন। তিনি বলেন,আমরাও চাই আমাদের প্রজম্মদের মধ্যে থেকে এধরণের কৃতিমান ,আলোকিত মানুষ গড়ে উঠুক। যারা সত্যিই গবেষণা করে তারা কোনো কোনো ফলাফল জাতিকে দিতে পারবে । তাদের জন্য আমাদের চিন্তা-চেতনাতেই আছে আরো বেশি সহযোগিতা করে যাওয়া। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন এই চিকিৎসা বিজ্ঞান শিক্ষার দিকে ভবিষ্যতে আরো বেশী এগিয়ে আসে। তারাই মানুষের সেবায়
নিজেদেরকে পরিচালনা করতে পারবে। সেদিকে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে । পারকিনসন্স রোগ সম্পর্কে সিটি মেয়র বলেন এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ নয়। এটি প্রতিরোধের উপায় এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে নিয়মিত ওষুধ সেবনে রোগী অনেক দিন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তিনি আরো বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে যাওয়ার পেছনে যে কাজটি সর্বাগ্রে প্রয়োজন সেটা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। এটি স্থির না থাকলে দেশ উন্নত হতে পারে না। আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো, ওই সময়ের মধ্যে আমরা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তারই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। অনুরূপভাবে চিকিৎসা বিজ্ঞাণের উন্নয়নের জন্য স্থির লক্ষ্য থাকাদ বাঞ্চনীয় বলে তিনি মনে করেন।
বিএমএ এর সভাপতি প্রফেসর ডা. মজিবুল হক খান বলেন ‘এ ধরনের রোগীদের নিয়মিত ওষুধ খাওয়া দরকার। ডায়াবেটিস রোগীদের যেমন সারা জীবন ওষুধ খেতে হয়, এই রোগীদেরও তেমনি সারা জীবন ওষুধ খেতে হয়। নিয়মিত ওষুধের ডোজ কখন বাড়াতে হবে, কখন কমাতে হবে তা নির্ধারণ করে দেয় চিকিৎসকেরা। যদি ওষুধের মাধ্যমে রোগীর উপসর্গ
প্রশমিত না হয়, তবে ডিবিএস পদ্ধতিতে রোগীর মস্তিষ্কে ক্ষুদ্র ইলেক্ট্রোড লাগানো হয়। এই ইলেক্ট্রোড মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশের স্নায়ুকোষকে উত্তেজিত করে পারকিনসন্স ডিজিজের উপসর্গ প্রশমিত করে। যখন ওষুধ কাজ করে না, তখন এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। তবে এই চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।’
এ কর্মশালায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তিন শতাধিক ডাক্তার
অংশ গ্রহন নেন।