আবু হেলাল, (শেরপুর ) :-
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঝগড়ারচর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবত নানা অনিয়ম আর অবহেলার কারণে বেহাল অবস্থার অভিযোগ। ক্রমশ ভেঙে পড়ছে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো। বেহাত হচ্ছে ভূ-সম্পত্তি। হ-য-ব-র-ল হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রশাসনের সাথে কথা হলে ওঠে আসে এসব তথ্য।
জানা গেছে , ঐতিহ্যবাহী এই ঝগড়ারচর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৮ সালে। ওই বিদ্যালয়ের ভূমির পরিমান প্রায় ৫ একর হলেও বাউন্ডারিসহ বিদ্যালয় ভবন রয়েছে প্রায় দেড় একর। অবশিষ্ট ভূমিতে বিশাল খেলার মাঠ ও কাঠের বাগান। এছাড়াও ঝগড়ারচর বাজারের অভ্যন্তরেও রয়েছে এই বিদ্যালয়ের সম্পত্তি। প্রায় এক যুগ আগেও ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। দিনদিন কমতে কমতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ থেকে ৪শ ।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি’র দায়িত্বে থাকেন দাতা সদস্য, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুল হক শাজাহান। ওই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাজাহানের বড় ভাই ছামিউল হক ফারুকি। তিনি অবসরে যাওয়ার পর প্রায় ৫ বছর যাবত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন মাহফুজুল হক। আর সহকারি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন শাহজাহানের ছেলে জাকির হোসেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদারকি’র অভাব আর নানা অনিয়মের কারণে ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে অফিস কক্ষসহ শ্রেণী কক্ষগুলো। বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে খেলার মাঠ দখল করে দোকানপাট স্থাপন করেছে স্থানীয়রা।

এতে ক্রমশ সংকোচিত হচ্ছে খেলার মাঠ। বেহাত হচ্ছে বিদ্যালয়ের ভূমি। এসব দোকান পাট থেকে আদায় হচ্ছে মাসিক ও বাৎসরিক অর্থ। তবে নেই কোনো হিসাব নিকাশ। বিদ্যালয়ের অর্জিত আয়, ব্যাংকে লেনদেন করার নিয়ম থাকলেও তার চিত্র ভিন্ন।এমনকি ওই বিদ্যালয়ের অর্থে নিজস্ব জমিতে সৃজিত বাগানের অধিকাংশ বৃক্ষ এখন আর নেই।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের আয়-ব্যায়ের হিসাব নিকাশ আমার কাছে নেই। এ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে একাধিকবার ম্যানেজিং কমিটিকে অবগতি করা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হামিদুল হক শাজাহান বলেন, এখানে অর্জিত আয়-ব্যায়ের হিসাব নিকাশ প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। নিয়ম অনুযায়ী সকল হিসাব সংরক্ষণের দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। তিনি কি করেছেন, তিনি ভাল বলতে পারবেন।
এসব নানা অনিয়মের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আলম তালুকদার বলেন, আমি কয়েকবার বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি। তবে লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে আমরা তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহন করবো।