চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজির দেউড়ি এলাকায় ছয়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মীর ইয়াহিয়া পুকুর প্রকাশ মীরা পুকুরটি দখল করে নেয়ার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন যাবত নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে প্রভাবশালী মহলটি অবৈধভাবে পুকুরটি ভরাট করছে। এছাড়া পুকুরটিতে ময়লা আবর্জনা ফেলে পুকুরের পানি দুষিত ও ব্যবহার অনুপযোগী করে তুলছে।
ঐতিহ্যবাহী এ মীরা পুকুরটি প্রভাবশালী মহলের হাত থেকে রক্ষা ও একে সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও প্রভাবশালী মহলটি তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
নগরীর ঐতিহ্যবাহী মীরা পুকুরটি প্রভাবশালীদের অবৈধ দখল থেকে রক্ষার দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নগরীর কাজির দেউড়িস্থ কাজী বাড়ি এলাকার মীরা পুকুর পাড়ে একটি মানববন্ধন আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে পুকুর রক্ষার দাবিতে সম্প্রতি চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়। উক্ত লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিছুদিন আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা সরেজমিন তদন্তে আসেন এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন।
এদিকে, উক্ত তদন্তের পর আগামী ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখ পরিবেশ অধিদপ্তরে এ সংক্রান্ত শুনানীর দিন ধার্য আছে।
উক্ত পুকুরটি প্রভাবশালী ব্যক্তি নগরীর চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা আবতাব মাহামুদ শিমুল। তিনি নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকার ছয়শত বছরের পুরাতন মীর ইয়াহিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন মীর ইয়াহিয়া পুকুর, প্রকাশ মীরা পুকুরটি অবৈধভাবে দখলে নেয়ার জন্য নানা পাঁয়তারা করছে। এরই অংশ হিসেবে পুকুরটিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাটের অপচেষ্টা করছে। গত কয়েকবছর যাবত উক্ত প্রভাবশালী আবতাব মাহমুদ শিমুল প্রকুরটি অবৈধভাবে দখলে নেয়ার চেষ্টা করে আসছেন। এর আগে ২০১৭ সালে একবার উক্ত আবতাব পুকুরটি ভরাটের চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করে এবং এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি করা হয় (জিডি নং- ১৬৭৯)।
অভিযোগে জানা গেছে, ইতোমধ্যে উক্ত প্রভাবশালী আবতাপ মাহামুদ শিমুল পুকুরটি নিজের দখলে নেয়ার জন্য পুকুরে থাকা দুটি ঘাটের দুটিই দখল করে নেয়। এরমধ্যে একটি ঘাট দখল করে সেখানে ঘর নির্মাণ করে ডেইরী ফার্ম করা হয়েছে। অথচ পুকুরটি এলাকার মুসলমানদের ওজু ও সাধারণ মানুষের ব্যবহারের একমাত্র পুকুর। কিন্তু পুকুরটিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পানি দুষিত ও পুকুরটি ভরাতের চেষ্টা করছে।
এদিকে অভিযোগে জানা গেছে, উক্ত প্রভাবশালীর ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে কাজী আনছারুল হক, পিতা- মরহুম এনামুল হক, কাজী আবু জাররার রুমেল, পিতা- মরহুম কাজী শাহজাহান, কাজী তাবাস্সুম মিতু, কাজী দানিয়ায়ুম রিতু তাকে সহযোগিতা করছেন। তারা সকল প্রকার বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করিয়া বর্ণিত পুকুর ভরাট কার্যক্রম চালাচ্ছে। এতে পরিবেশ মারাত্মক দূষিত ও বিপর্যয় হচ্ছে। এছাড়া পুকুরে বস্তা, ময়লা, আবর্জনা ফেলিয়া মুসল্লী ওজু এবং গোসলে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। অন্যদিকে এ পুকুরে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় ওজু ও গোসল করিলে নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
এলাকার মুসল্লি ও সাধারণ মানুষের দাবি ছয়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী উক্ত মীরা পুকুরটি প্রভাবশালী ব্যক্তির অবৈধ দখল থেকে রক্ষা করে পুকুরটিকে পুন:সংস্কার করে ঐতিহ্য রক্ষা ও সাধারণ মানুষের ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়া হোক।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি